সোমবার, ১৫ পৌষ, ১৪৩১ | ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিগুলো বড় ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে গেলে বৈশ্বিক জিডিপির বড় ধরনের সংকোচন হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। অর্থনীতির এই সংকোচনের পরিমাণ ইউরোপের দুই বড় দেশ ফ্রান্স ও জার্মানির সম্মিলিত জিডিপির সমান হতে পারে। খবর বিবিসি।

নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন—এই কারণে এমন উদ্বেগ বাড়ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের যত পণ্য আমদানি করে, তার ওপর সর্বজনীন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা আছে। সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে এই শুল্ক আরোপ হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতিমধ্যে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা শুরু করেছে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, শুল্ক হলো অভিধানের সবচেয়ে সুন্দর শব্দ। তাঁর এই মন্তব্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রীরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। এর আগেও তিনি এমন কাজ করেছেন। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ তিনিই শুরু করেছিলেন। বাইডেন প্রশাসনও তা অব্যাহত রেখেছে।

আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গীতা গোপীনাথ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য পরিকল্পনার প্রভাব কী হবে, তা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হলে বা বড় পরিসরে শুল্ক আরোপ করা হলে বিশ্ব জিডিপি প্রায় ৭ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

গীতার ব্যাখ্যা, ৭ শতাংশ খুব বড় সংখ্যা; এটি কার্যত ফ্রান্স ও জার্মানির অর্থনীতির মান। ফ্রান্স ও জার্মানি বৈশ্বিক অর্থনীতির বড় একটি অংশ। এই দুই দেশের জিডিপির সমান ক্ষতি বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা হবে। তিনি আরও বলেন, হাজার হাজার কোটি ডলারের সমপরিমাণ শুল্কের যে প্রস্তাব—এটা ভিন্ন বিষয়। গত দুই বা তিন দশকে যে পৃথিবীতে মানুষ বসবাস করেছে, তা থেকে অনেকটাই ভিন্ন।

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের যৌথ বৈঠকে আরও যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ। বিশ্বের অনেক দেশে সরকারি ঋণ বাড়ছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন একধরনের স্থিতিশীলতা আছে। ফলে দেশগুলোর উচিত হবে, আপৎকালের জন্য আর্থিক প্রস্তুতি নেওয়া। সংকট এখনো আছে, তবে এটাই শেষ নয়। ভবিষ্যতে আরও সংকট আসবে। সেই সময়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

গীতা গোপীনাথ আরও বলেন, অতীতে মূল্যস্ফীতি কমানোর লড়াই করতে গিয়ে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়েছে। তখন বেকারত্ব অনেকটা বেড়ে গেছে। এবারও তেমন আশঙ্কা ছিল, যদিও শেষমেশ তা হয়নি।

এবার মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেন গীতা গোপীনাথ। বেকারত্বের হার বাড়েনি। ফলে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version