সোমবার, ১৫ পৌষ, ১৪৩১ | ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

গম থেকে উৎপন্ন আটা-ময়দা একধরনের স্টার্চজাতীয় খাবার। এতে গ্লুটেন থাকে। গ্লুটেন অসহিষ্ণুতা বা সংবেদনশীলতা যাঁদের থাকে, একসময় তাঁদের আটা-ময়দার তৈরি খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে যাঁদের গ্লুটেন হজমে সমস্যা নেই, তাঁরাও যদি দীর্ঘদিন আটা-ময়দায় তৈরি খাবার খান, অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল জ্বালা অন্যতম।

সাধারণত গ্লুটেন থেকে বদহজম হয়। দেখা যায়, এ–জাতীয় খাবার খেলেই ডায়রিয়া বা পেট ফাঁপার মতো সমস্যা হয়ে থাকে। এটি একটি অটো ইমিউন রোগ যা অন্ত্রের ক্ষতি করে। গম থেকে উৎপন্ন আটা ও ময়দাজাতীয় খাবার যেমন রুটি, বিভিন্ন সিরিয়াল, রাই, বার্লি, ওটস, প্যাটিস, কেক, বিস্কুট, পিৎজা, পাস্তা, গমের ব্রেডক্রাম্ব, পেস্ট্রি, ন্যুডলস এ–জাতীয় আটা ও ময়দার তৈরি খাবারে প্রচুর গ্লুটেন থাকে। কিছু কিছু ওষুধেও গ্লুটেন থাকে।

আরও যেসব কারণে গ্লুটেন বা আটা-ময়দাকে এড়িয়ে চলতে পারি—

১. এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যে সমস্যা করে। হজমজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন অন্ত্রে জীবাণু সৃষ্টি করে, স্নায়বিক কোলন সমস্যা তৈরি করে, পেটে প্রদাহজনিত রোগ হয়, অন্ত্রে প্রদাহ তৈরি করে। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, গ্যাস, বদহজম হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে থাকে।

২. অটিজমের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত প্রদাহ বাড়ায়, যা মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। তাই তাদের ক্ষেত্রেও এড়িয়ে চলতে বলা হয়।

৩. আটা-ময়দার তৈরি খাবার প্রতিনিয়ত গ্রহণ করলে অনেকের অন্ত্র ফুটো হয়ে যেতে পারে। ফলে রক্তের পুষ্টি উপাদান কোষে প্রবেশ করতে পারে না। পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। পাশাপাশি গ্যাস ও বমি বমি ভাব হয়।

৪. যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে, তাদের বিপাককে ধীর করে দেয়। ফলে সবকিছুতে তারা দেরিতে ফলাফল পায়।

৫. এই খাবারগুলো প্রতিনিয়ত খেতে থাকলে অক্সিজেন চক্রের সমস্যা হয়। ফলে কার্বনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

উল্লিখিত বিষয়গুলো যে সবারই হয় বা হবে, এমনটি নয়। তবে সমস্যাগুলো শুরু হলে অনেকেই বুঝতে পারেন না। ইদানীং গবেষণায় দেখা গেছে, অন্ত্রের সমস্যার জন্য গ্লুটেনকেই বেশি দায়ী করা হচ্ছে। আপনি যদি গম এবং গ্লুটেনমুক্ত বিকল্প খাদ্য নিতে চান, তবে চালের আটা, ভুট্টা, ভুট্টার আটা, সয়াবিন, সয়া আটা, আলু, কিনওয়া, অ্যারারুট, ছোলা, মসুর ডালের আটা ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।

সাজিয়া মাহমুদ, কনসালট্যান্ট পুষ্টিবিদ, প্যানকেয়ার হাসপাতাল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version