ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য দূরপাল্লার আক্রমণাত্মক ড্রোন উৎপাদন করতে চীনে গোপন অস্ত্র প্রকল্প চালু করেছে রাশিয়া। ইউরোপের একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুটি সূত্র ও রয়টার্সের পর্যালোচনা করা নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
একটি নথিতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অস্ত্র কোম্পানি আলমাজ-আন্তের সহায়ক সংস্থা আইইএমজেড কুপোল স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় চীনে গারপিয়া-৩ (জি–৩) নামের একটি নতুন মডেলের ড্রোন তৈরি করে পরীক্ষা করেছে। চলতি বছরের শুরুতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে কুপোলের কাজের রূপরেখা দিয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, চীনের উচিত রাশিয়ার সামরিক কাজে ব্যবহার করার জন্য তাদের কোনো কোম্পানি যাতে সহায়তা না দেয় তা নিশ্চিত করা।
কুপোল পরবর্তীতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে আরও জানিয়েছে, তারা চীনের একটি কারখানায় জি–৩-সহ অন্যান্য ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এসব ড্রোন ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ ব্যবহার করা যেতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধকে রাশিয়া বিশেষ সামরিক অভিযান বলে আসছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ে অনুরোধ করলেও সাড়া দেয়নি কুপোল, আলমাজ-আন্তে ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। অপরদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এ ধরনের প্রকল্প সম্পর্কে কিছু জানে না। তারা আরও বলেছে ড্রোন, বা মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) রপ্তানির ওপর তাদের কড়াকড়ি রয়েছে।
ওয়াশিংটনের চিন্তক প্রতিষ্ঠান দ্য সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির (সিএনএএস) গবেষক স্যামুয়েল বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধে সাহায্য করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় পড়তে চাইবে না চীন। তাই রাশিয়ার সামরিক ড্রোন উৎপাদনে চীন সহায়ক ভূমিকা পালন করছে, সেটি নিশ্চিত হতে আরও তথ্য জানা প্রয়োজন।
তবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বলেছে, চীনে রাশিয়ার ড্রোন প্রকল্প চালুর খবরে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া রাশিয়ার একটি কোম্পানিকে চীনা কোম্পানির বিপজ্জনক সহায়তা দেওয়ার দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছে তারা।