শনিবার, ৪ মাঘ, ১৪৩১ | ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির এ মামলায় ইমরানকে ১৪ ও বুশরাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতকক্ষে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা আজ শুক্রবার এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেও তা পেছানো হয়েছিল।

এদিকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ইমরান ও বুশরাকে জরিমানাও করেছেন আদালত। ইমরানকে ১০ লাখ ও বুশরাকে ৫ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে ইমরানকে অতিরিক্ত ছয় মাস ও বুশরাকে তিন মাস কারাগারে থাকতে হবে।

রায় ঘোষণা উপলক্ষে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে আজ কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর আদালতকক্ষ থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। ১৯ কোটি পাউন্ড তছরুপের অভিযোগে তাঁর ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করেছিল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টাবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। মামলায় ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর সাধারণ নির্বাচনের পরপর গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলায় ইমরান ও বুশরাকে অভিযুক্ত করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইমরান ও বুশরা বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি এবং অনেক জমি নিয়েছিলেন। ইমরানের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী পিটিআই সরকারের সময় যুক্তরাজ্য পাকিস্তানকে যে পাঁচ হাজার কোটি রুপি অর্থ ফেরত দিয়েছিল, তা বৈধ করতে এসব লেনদেন করা হয়েছে।

গত ২৩ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের অ্যাকাউন্টাবিলিটি আদালতে মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে শীতকালীন ছুটির কারণে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত রায় স্থগিত করা হয়। ৬ জানুয়ারি বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা ছুটিতে থাকায় সেদিনও রায় ঘোষণা করা হয়নি। এরপর ১৩ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ইমরান ও বুশরা আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত আদালতকক্ষে হাজির হতে পারেননি উল্লেখ করে সেদিনও রায় স্থগিত করা হয়। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

২০২২ সালের ৯ এপ্রিল পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান। পরে বেশ কয়েকটি মামলায় ২০২৩ সালের আগস্টে তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়। ইমরানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এরই মধ্যে গত বছর সাইফার ও ইদ্দত মামলায় খালাস পান তিনি। তবে গত ডিসেম্বরে তোশাখানা–২ মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা চলমান।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইমরান অভিযোগ করেন, তাঁর ওপর চাপ তৈরি করতে রায় ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। এটিকে ‘ভুয়া মামলা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। ইতিমধ্যে, সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছে পিটিআই। বৃহস্পতিবার তারা সরকারের কাছে তাদের দাবিদাওয়াও উপস্থাপন করেছে।

একই দিন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং পিটিআই নেতা আলী আমিন গান্দাপুর ও ব্যারিস্টার গহর আলীর মধ্যে বৈঠক হয়েছে। দুই পক্ষই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version