সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ফ্যাক্টচেকিং বা তথ্যের সত্যতা যাচাই বন্ধের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি মেটার এ উদ্যোগকে ‘সত্যিই লজ্জাজনক’ বলেছেন।
ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রামগুলো অতিমাত্রায় সেন্সরশিপের দিকে ঝুঁকে পড়েছে—এমন অভিযোগ তুলে মেটার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে তথ্য যাচাইয়ের ব্যবস্থা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জাকারবার্গ বলেন, পালো অল্টো কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় পক্ষের তথ্য যাচাই বন্ধ করে দিচ্ছে এবং ‘কমিউনিটি নোটস’ নামে পরিচিত একটি মডেলের অধীন সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে মিথ্যা তথ্য উন্মোচনের কাজটি হস্তান্তর করেছে।
আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তথ্য যাচাইয়ে এ মডেল জনপ্রিয়। পালো অল্টো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি।
জাকারবার্গের ঘোষণাকে অনেকে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুশি করার চেষ্টা বলছেন। ট্রাম্পভক্তরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছেন, প্রযুক্তির বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ফ্যাক্টচেকিংয়ের নামে বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয় এবং ডানপন্থী কনটেন্টের (আধেয়) প্রকাশ আটকে দেওয়া হয়। ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প।
গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকেরা বাইডেনকে জাকারবার্গের ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা খুবই লজ্জাজনক। সত্য বলা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত।’
মেটার কনটেন্ট সম্পাদনা নীতিমালায় পরিবর্তন আনার ঘোষণার দিন জাকারবার্গ বলেছিলেন, ফ্যাক্টচেকাররা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। এ ছাড়া ফ্যাক্টচেকাররা অতিমাত্রায় ভুল করছেন এবং সেন্সরশিপ আরোপ করছেন। তবে জাকারবার্গের এ অভিযোগকে মিথ্যা বলেছে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক।
জাকারবার্গের ঘোষণার দুই দিন পর গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে মেটার ফ্যাক্টচেকিং কার্যক্রম চালু আছে। এখন যদি মেটা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও তাদের এ ফ্যাক্টচেকিং কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে চায়, তবে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক আরও বলেছে, ‘এসব দেশের মধ্যে কয়েকটি দেশে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়া অত্যন্ত ঝুঁকির। ফলে সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা ও গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।’